বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে ব্যাখ্যা করেছে বিএনপি।
গতকাল বিকালে রাজধানীর গুলশানের হোটেল লেকশোরে এই ব্রিফিং করেন বিনএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিকাল ৪টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী কূটনীতিকদের সঙ্গে দলটির নেতাদের বৈঠক হয়।

ব্রিফিংয়ের পর বিএনপি’র বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকে বিষয়টা ছিল ব্রিফিং। বিশেষ করে বর্তমান রাজনৈতিক ঘটনাবলী। কি ঘটেছে ২৯ তারিখের আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকার ও সরকারি দলের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের যে যৌথ কর্মকাণ্ড, মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার ইত্যাদি বিষয়গুলো আমরা বলেছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে, গণতন্ত্র দেখতে চায়, গণতান্ত্রিক অর্ডার দেখতে চায়, মানবাধিকার দেখতে চায়, তাদের জানা দরকার। এ কথাগুলো আমরা আগে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছি। আজকের ব্রিফিংয়েও এই কথাগুলো বলেছি। কারণ ওরা জানতে চায় কী হচ্ছে বাংলাদেশে? নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ যে পথে চলছে- ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করা, সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহার করা প্রতিনিয়ত হচ্ছে।

আমীর খসরু বলেন, যতো ঘটনা ঘটবে আমরা আপনাদের কাছে তুলে ধরবো, সকলকে বলবো। ২৮ ও ২৯শে জুলাই যথাক্রমে ঢাকায় বিএনপি’র মহাসমাবেশ ও প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ ও সরকারি বাহিনীর সন্ত্রাসী হামলা, গ্রেপ্তার, নির্যাতনের ঘটনাও কূটনীতিকদের বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

এই ধরনের আক্রমণ, গ্রেপ্তার, যাদের আহত করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা, অনেকে বিদেশে আছেন, অনেকে হজে আছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা উদ্দেশ্যটা তো বোঝাই যাচ্ছে। তাদের টার্গেট হচ্ছে আবার ভয়-ভীতি দেখিয়ে একটা নির্বাচনী কৌশলে ভোট চুরি করে ক্ষমতা দখল করা।
আপনাদের বক্তব্যের পর বিদেশি কূটনীতিকরা কি বলেছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তো সার্বিক পরিস্থিতি ব্রিফ করেছি। উনাদের বলার বিষয় নয়। আর এদের (এই সরকার) অধীনে যে নির্বাচন হবে না। এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। সেজন্যই তো নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কথাটা এসেছে।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, জাপান, চীন, রাশিয়াসহ ২৫টি দেশের কূটনীতিক অংশ নেন।

বৈঠকে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, শামা ওবায়েদ, আসাদুজ্জামান আসাদ, নওশাদ জমির, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন, নজরুল ইসলাম আজাদ, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, রুমিন ফারহানা, ফারজানা শারমিন পুতুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।