নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে স্বামীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে নববধূকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার এজাহারভুক্ত আনোয়ার হোসেন রিয়াদ (৩০) ও জালাল উদ্দিন (২৮) নামের দুই আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার (২১ জুন) বিকেলের দিকে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-২ (কোম্পানীগঞ্জ-চর জব্বর) এর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এমদাদ এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়া আসামিরা হলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একরামুল হকের ছেলে রিয়াদ ও মুছাপুর ক্লোজারের রেগুলেটর মোড়ের আলাউদ্দিনের ছেলে জালাল উদ্দিন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম মিজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আসামিদের জেলা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এমদাদ এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন। প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (২০ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মুছাপুর সীমান্ত এলাকা থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আনোয়ার হোসেন রিয়াদ ও জালাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১।
র্যাব-১১-এর সিপিসি-৩ নোয়াখালীর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান বলেন, তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতাসহ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে রিয়াদ ও জালালকে গ্রেপ্তার করা হয়। কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে তারা আদালতে সোপর্দ করে। মামলার প্রধান আসামি পলাতক জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তারে আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ জুন (বুধবার) সকাল ৯টার দিকে সুধারাম থানার নোয়াখালী ইউনিয়ন থেকে মুছাপুর রেগুলেটর এলাকায় ঘুরতে যান নবদম্পতি। স্লুইসগেট এলাকায় বনবিভাগের বাগানের পাশের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলেন তারা। এ সময় জাহাঙ্গীর, রিয়াদ ও জালাল ছুরি দেখিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে নবদম্পতিকে আটক করে। পরে স্বামীকে মারধর করে গামছা দিয়ে গাছে বেঁধে নববধূকে বনবিভাগের বাগানে নিয়ে জাহাঙ্গীর ও রিয়াদ ধর্ষণ করে। ওই সময় গৃহবধূর স্বামীকে পাহারা দেয় জালাল। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় গত রোববার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ থানায় তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন নববধূর স্বামী।
মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের প্রতিটি দপ্তরে পর্যটকদের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছি। কেউ ভ্রুক্ষেপ করেনি। অপরাধী সব সময় অপরাধী। আইন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আপনাদের মাধ্যমে আমি আরও জানাতে চাই মুছাপুর ক্লোজার এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি বা টুরিস্ট পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হোক।