দলের বাধা মানলেন না তারা। নেতাদের অনুরোধও রাখলেন না। নির্বাচন বয়কট করা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী তাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন। সিলেটের সিনিয়র নেতারাও যোগাযোগ রাখলেন। কিন্তু কারও কথা শুনলেন না তারা। থেকেই গেলেন ভোটের মাঠে। এতে বিব্রত সিলেট বিএনপি’র নেতারা। সিলেটে বিএনপি শূন্য ভোটের মাঠ করতে পারলেন না তারা। গতকাল ছিল আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন। অপেক্ষা ছিল দিনভর।
কেউ কী যান রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে। দিন শেষে কেউ প্রত্যাহার করলেন না। দলের শাস্তির খড়্গ জানা আছে সবার। হতে পারেন আজীবনের জন্য বহিষ্কার। এরপরও তারা অনড়ই থাকলেন।
বিগত দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সিলেটে বিএনপি’র জয়জয়কারই ছিল। খোদ সিটি মেয়র ছিলেন বিএনপি দলীয়। এবারের নির্বাচনেও মাঠ প্রস্তুত ছিল মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর। মাঠ না ছাড়তে জনগণের চাপও ছিল। কিন্তু বিএনপি’র সিদ্বান্ত ছিল ভোটে না যাওয়া। ফলে আরিফ ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ান। একইসঙ্গে দলের সিলেটের নেতাদেরও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। ভোটারদেরও কেন্দ্রে যেতে মানা তার। এই অবস্থায় সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে চূড়ান্ত লড়াইয়ে থেকে গেলেন বিএনপি’র কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তবে ইতিমধ্যে সরে গেছেন অনেকেই। সংবাদ সম্মেলন করে মাঠ ছেড়েছেন অন্তত ১৫ জন নেতা। বিএনপি’র নেতাদের মতে- সিলেট সিটি নির্বাচনের মাঠে প্রার্থী হিসেবে রয়ে গেছেন অন্তত ১৫ জন। তারা বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে লড়াই করছেন।
কাউন্সিলর পদে যারা প্রার্থী হয়েছেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের বিগত কমিটির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও সিলেটের সাবেক সভাপতি ফরহাদ চৌধুরী শামীম, মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী এডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজ, মহানগর বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী সালেহা কবির শেপী, ১৪নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মুনিম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন। ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম জানিয়েছেন, জনগণ তার সঙ্গে রয়েছে। জনগণের উপর ভরসা রেখেই তিনি প্রার্থী হয়েছেন। দুইবারের কাউন্সিলর ১নং ওয়ার্ডের সৈয়দ তৌফিকুল হাদী। এবারো তিনি প্রার্থী হয়েছেন। জনগনের চাপের কারণে প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেননি বলে জানান হাদী। সংরক্ষিত ২২, ২৩ ও ২৪নং ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হওয়া জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী সালেহা কবির শেপীর মতে- তিনি আগে কাউন্সিলর ছিলেন। ২০১৮ সালে পরাজিত হওয়ার পর থেকে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।
করোনা, বন্যায় ছিলেন মানুষের কাছাকাছি। তফশিল ঘোষণার পর পর দলের তরফ থেকে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। যখন দেয়া হয় তখন অনেক সময় চলে গেছে। নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার পথ খোলা ছিল না। এবার মাঠ ছাড়লে ভবিষ্যতে জনগণ তার পাশে থাকবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। এবার সাধারণ ২৫নং ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী এডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজ। তিনিও শেষ দিনেও মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। জানিয়েছেন, এলাকার মানুষের কাছে বন্দি হয়ে পড়েছি। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই। এ কারণে সাধারণ ওয়ার্ডে এবার প্রার্থী হয়েছি। ১৪নং ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মুনিম জানিয়েছেন- আমরা দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করিনি। সর্বদলীয় ভোটে কাউন্সিলর হয়েছি। দলের সিদ্বান্তে মাঠ থেকে সরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তার সঙ্গে সর্বদলীয় নেতাদের মতামত রয়েছে বলে দাবি করেন মুনিম।