কেরানীগঞ্জও আসছে নতুন প্রশাসনিক কাঠামোর আওতায়
সাভার পৌরসভা ও আশুলিয়াকে একত্রিত করে একটি পূর্ণাঙ্গ সাভার সিটি করপোরেশন গঠন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে, রাজধানীর পার্শ্ববর্তী কেরানীগঞ্জ উপজেলাকে হয় ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা অথবা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। সরকারের এই যুগান্তকারী পদক্ষেপের ফলে সাভার পৌরসভা এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান কার্যক্রম বিলুপ্ত হয়ে যাবে।সিদ্ধান্তের পটভূমি ও অনুমোদন:মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখা কর্তৃক চলতি মাসের ১২ অক্টোবর উপসচিব মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফ স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই সিদ্ধান্তের কথা জানা গেছে। বিভাগীয় কমিশনারের পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উত্থাপিত এই প্রস্তাবটি প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। অনুমোদনের পর প্রস্তাব বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে যে, সাভার ও আশুলিয়া অঞ্চল অপরিকল্পিত শিল্পকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র এবং বিপুল জনসংখ্যার চাপে এক বিশাল নগর এলাকায় পরিণত হয়েছে।পৌরসভার সীমিত সম্পদ ও জনবল ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার নাগরিক চাহিদা পূরণে সম্পূর্ণভাবে অপ্রতুল।
আশুলিয়া অঞ্চল: বিপুল সংখ্যক গার্মেন্টস শিল্প, শ্রমিকবসতি ও আবাসিক এলাকা গড়ে উঠলেও ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে পরিকল্পিত নগরায়ণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপদ পানি সরবরাহ বা পরিবেশ সংরক্ষণের মতো নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলস্বরূপ, জনগণকে যানজট, অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন ও অবকাঠামোগত সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।কেরানীগঞ্জের জন্য নতুন প্রস্তাব:অন্যদিকে, ঢাকা শহরের প্রসার ও জনসংখ্যার চাপে কেরানীগঞ্জও দ্রুত অপরিকল্পিত নগরায়ণের দিকে এগোচ্ছে। এখানে পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের মতো প্রতিষ্ঠান না থাকায় সড়ক, ড্রেনেজ, পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক নাগরিক সেবা প্রদান করা যাচ্ছে না। পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হলে কেরানীগঞ্জ আধুনিক ও প্রাণবন্ত উপশহর হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, “সরকারের এই সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী। এর ফলে উন্নয়ন বঞ্চিত এবং অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার কিছুটা হলেও দূর হবে এবং প্রাপ্য নাগরিক সুবিধা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা যাবে।”