বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের কৃষকদের ভাগ্যোন্নয়নে ছয় দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে দেওয়া এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বার্তায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে কৃষকদের পরিশ্রমে, ত্যাগে ও সহনশীলতায়।”
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে—খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের মূল চাবিকাঠি হলো সরকার, কৃষক ও উদ্যোক্তাদের যৌথ অংশীদারিত্ব। সেই অংশীদারিত্বের ভিত্তিতেই গড়ে উঠবে টেকসই খাদ্যব্যবস্থা।
তিনি স্মরণ করেন, কীভাবে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দুর্ভিক্ষের ছায়া থেকে জাতিকে উদ্ধার করেছিলেন সেচ সম্প্রসারণ, খাল পুনর্নির্মাণ ও বহু ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে।
একই ধারায় বেগম খালেদা জিয়া সার ভর্তুকি, গ্রামীণ বিদ্যুতায়ন ও “কাজের বিনিময়ে খাদ্য” কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকদের আত্মনির্ভর করে তোলেন।
বর্তমান বিশ্বে খাদ্যের উচ্চমূল্য, পানিসংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের খাদ্য ও কৃষিনীতিকে হতে হবে মানবিক ও উদ্ভাবননির্ভর।”
তারেক রহমানের ঘোষিত বিএনপির খাদ্য নিরাপত্তা পরিকল্পনার ছয়টি মূল অঙ্গীকার হলো—
১️⃣ কৃষক কার্ড উদ্যোগ:
প্রত্যেক কৃষককে ডিজিটাল পরিচয়পত্রের মাধ্যমে সরাসরি ভর্তুকি, ন্যায্যমূল্য, ঋণ, ফসল বীমা ও সরকারি ক্রয় সুবিধা দেওয়া হবে—মধ্যস্বত্বভোগীদের ছাড়াই।
২️⃣ জলবায়ু সহনশীল কৃষি ও পানিসুরক্ষা:
২০ হাজার কিমি নদী ও খাল পুনঃখনন, কমিউনিটি সেচব্যবস্থা পুনরুজ্জীবন এবং আধুনিক তিস্তা ও গঙ্গা ব্যারাজ নির্মাণ।
৩️⃣ পানিসংরক্ষণ-ভিত্তিক কৃষিকাজ:
‘অল্টারনেট ওয়েটিং অ্যান্ড ড্রায়িং’ পদ্ধতি সম্প্রসারণ করে পানি সংরক্ষণ ও কার্বন ক্রেডিট অর্জন।
৪️⃣ পুষ্টি ও মানব উন্নয়ন:
‘ফ্যামিলি কার্ড’ ও ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ কর্মসূচির মাধ্যমে নারীদের গৃহপ্রধান হিসেবে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার নেতৃত্বে আনা।
৫️⃣ কৃষির মাধ্যমে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন:
কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে ১৩ লাখ কর্মসংস্থান, ঠান্ডা সংরক্ষণাগার ও রপ্তানিমুখী খাদ্যশিল্প গড়ে তোলা, তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য স্টার্টআপ ফান্ড ও ড্রোন প্রযুক্তি সরবরাহ।
৬️⃣ পরিবেশ ও টেকসই উন্নয়ন:
‘সার্কুলার ইকোনমি’ মডেলের মাধ্যমে কৃষিজ, প্লাস্টিক ও ই-বর্জ্য পুনঃব্যবহারযোগ্য সম্পদে রূপান্তর; রিসাইক্লিং হাব ও বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন।
তারেক রহমান বলেন, “নিশ্চয়তার অভাবে ভরা এই বিশ্বে বাংলাদেশ প্রমাণ করতে পারে—খাদ্য নিরাপত্তা, টেকসইতা ও কৃষকের মর্যাদা অর্জনযোগ্য বাস্তবতা।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বিএনপি কৃষকদের ক্ষমতায়ন করে এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলবে, যেখানে মাটির ঘামই হবে জাতির শক্তি ও ভবিষ্যতের ভিত্তি।