নোয়াখালীর হাতিয়ায় চুরির দায়ে জাহেদ হোসেন (১৮) নামে এক তরুণকে সালিশে বৈঠকের কথা বলে আটক করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে ওই তরুণের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জাহেদ হোসেন উপজেলার চানন্দি ইউনিয়নের প্রকল্প বাজার এলাকার মো. জাকেরের ছেলে। অভিযুক্ত সোহেল মাহমুদ হাতিয়া উপজেলার ২নং চানন্দি ইউনিয়ন পশ্চিম শাখা বিএনপির সভাপতি। জানা গেছে অভিযুক্ত সোহেল মাহমুদ অনেক নেতারই অনুসারী।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জাহেদ হোসেন গত সপ্তাহে বিএনপি নেতা সোহেল মাহমুদের বাড়িতে মাসিক চুক্তিতে দিনমজুরের কাজ শুরু করে। ২-৩ দিন কাজ করে সে কাউকে না জানিয়ে ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে। এ সময় সোহেল মাহমুদের বাড়ি থেকে তাদের ঘরের আলমারির চাবি, মোবাইল চার্জার ও আসবাবপত্র জাহেদ হোসেন চুরি করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ ওঠে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার আলি বাজার এলাকা থেকে জাহেদ হোসেনকে ধরে মোটরসাইকেলে করে প্রকল্প বাজার এলাকায় নিয়ে যায় সোহেল মাহমুদ। সেখানে সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এ সময় সেখানে তার বাবাকেও ডাকা হয় এবং চুরির বিষয়টি জানানো হয়। একপর্যায়ে তার বাবাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হলেও জাহেদ হোসেনকে প্রকল্প বাজারে আটকে রেখে হুমকি-ধমকি ও নির্যাতন করা হয়। আজ সকালে প্রকল্পের সড়কের গাছ থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জাহেদ হোসেনের বাবা মো. জাকেরের অভিযোগ, আমার ছেলেকে চুরির দায়ে আটক করে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। ছেলে যদি অপরাধ করে থাকতো তাকে আমি শাসন করতে পারতাম। তারা আমার ছেলেকে কেন আমার হাতে ছেড়ে দেয়নি? কেন আটকে রেখেছে? এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের দাবি করেন তিনি।
এই ঘটনায় বিএনপি নেতা সোহেল মাহমুদ বলেন, কয়েকদিন আগে ছেলেটা আমাদের বাড়িতে থেকে কাজ করতো। সে আমাদের ঘর থেকে চাবি, মোবাইলে চার্জারসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি করে নিয়ে যায়। গতকাল সন্ধ্যায় তাকে হাতিয়ার আলি বাজার এলাকায় দেখা গেলে সেখান থেকে তাকে প্রকল্প বাজার তার বাড়ির সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার বাবাকে ডেকেই তার সামনেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর বেশি আমি কিছু জানি না। আজ সকালে আমি ঘুম থেকে উঠে তার মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারি।
হাতিয়ার মোর্শেদ বাজার তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ মহিউদ্দিন বলেন, বিষয়টি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।