দেশে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ৯ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। যা অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কার চেয়েও বেশি। এই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারা সরকারের বড় ব্যর্থতা।
রোববার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ সিপিডি আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা শীর্ষক আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এখন বিলাসপণ্যের কাতারে চলে গেছে। দাম বাড়ার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের তুলনায় মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে ১৭ ভাগ, পাইজামের দাম ১৫ ও মোটা চাল ৩০ ভাগ। অর্থাৎ মুনাফাখোররা বেশি লাভ যেখানে করছে, যে পণ্য গরিব ও মধ্যবিত্তরা ব্যবহার করে এবং বাজারে বেশি বিক্রি হয়। তিনি বলেন, মুসর ডাল ৯৫, আটা ৪০-৫৪ ময়দা ৬০, খোলা সয়াবিন ৮৪ ভাগ, বোতলজাত সয়াবিন ৫৬ ও পামওয়েলে ১০৬ ভাগ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গরুর মাংসের দামও বেশি, ব্রয়লার মুরগি ৬০ ভাগ, চিনির দাম ১৫২ ভাগ, গুড়া দুধ ৪৬-৮০, পেঁয়াজ ১৬৪, রসুন ৩১০ ও শুকনা মরিচ ১০৫ ভাগ বেড়েছে। যা আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় অনেক বেশী।
আগের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সিপিডি আরও জানায়, ঢাকায় সাধারণ তিন ধরনের চালের দাম ধারাবাহিকভাবে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের চালের তুলনায় বেশি।
সয়াবিন তেলের দাম সম্পর্কে সিপিডি বলছে, এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্ববাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ছিল বাংলাদেশি টাকায় ১০৫ টাকা।
এটি দেশের বাজারে বিদ্যমান দামের তুলনায় কম।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে চিনির দাম প্রতি কেজি ৩৯ টাকা, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৯৬ টাকা ও বিশ্ববাজারে ৫০ টাকা।
সিপিডি মনে করে, বেশকিছু চ্যালেঞ্জের কারণে দেশের অর্থনীতি বর্তমানে বেশ চাপে আছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারই বাজেটের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিবর্তে দুর্বল ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করা নীতিনির্ধারকদের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
মূল্যস্ফীতিতে জর্জরিত সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকারের নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার দিকে নজর দিতে হবে।