বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ অপরাহ্ন

বাংলাদেশে গণগ্রেপ্তার, বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে উদ্বেগ

Coder Boss
  • Update Time : সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৩
  • ২৪০ Time View

জেনেভায় আজ জাতিসংঘের ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউতে (ইউপিআর) বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি যাচাইয়ে উঠছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম, বিরোধী নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তারের অভিযোগ। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা ২০২০ সালে কমে এলেও র‌্যাবের হাতে এসব ঘটনা, মাদকবিরোধী অভিযানে নির্যাতন ও অবমাননাকর আচরণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনের সুপারিশ নিয়ে এসব বিষয়ে গত ২৪শে আগস্ট জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ একটি সারসংক্ষেপ প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, প্রতিবাদ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ বা বেআইনি শক্তি প্রয়োগের ঘটনা তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

একই সঙ্গে এসব ঘটনায় নেতৃত্ব পর্যায়ে থাকা ব্যক্তিসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতায় আনার কথা বলা হয়েছে। ১৮টি সংগঠনকে জেএস১৮ বা জয়েন্ট স্টেটমেন্ট১৮ নামে পরিচয় দেয়া হয়েছে এই সারসংক্ষেপে। একই রকম অন্য সংগঠনগুলোকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। জেএস১৮ বলেছে, নির্বাহী বিভাগ থেকে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় ঘাটতি আছে। কারণ, বিচারক নিয়োগ এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে আইন মন্ত্রণালয়। এর ফলে জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতায় ঘাটতি থেকে যায়। একই মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো বলেছে, রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, নির্বাচন কমিশন, দুদক, আইন প্রয়োগকারী এজেন্সিগুলো এবং বিচারবিভাগসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করছে সরকার।

এতে আরও বলা হয়েছে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের গঠন এবং এর কার্যকারিতার নিয়ন্ত্রণকারী কাঠামো প্যারিস প্রিন্সিপালের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য নাগরিক সংগঠনগুলোর দাবি থাকলেও তা উপেক্ষা করছে সরকার। এতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ প্যারিস প্রিন্সিপালের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ রেখে সংশোধন করার আহ্বান জানিয়েছে জেএস১২, জেএস১৭ ও জেএস১৮। বিচারবহির্ভূত হত্যা, নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন, জেএস১৮ উল্লেখ করেছে যে, এসব ঘটনায় জড়িত আইন প্রয়োগকারী এজেন্সিগুলোকে পরিণতি ভোগ করার ঘটনা বিরল। নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে মিথ্যাভাবে চালিয়ে দেয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ তদন্ত ও জবাবদিহিতা দাবি করা হয়েছে। গত ইউপিআর পর্যালোচনার সময় থেকে বাংলাদেশে বহু নির্যাতন এবং নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে তদন্তের ক্ষেত্রে তাদের সীমিত কর্তৃত্বের বিষয় স্বীকার করেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করতে একটি নিরপেক্ষ মেকানিজম প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করা হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও জেএস১৮ বলেছে, জোরপূর্বক মোট ১৯২ জনকে গুমের খবর থাকলেও সরকার অব্যাহতভাবে জোরপূর্বক গুমের কথা অস্বীকার করে আসছে। জেএস১৮ এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জোরপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে, যাতে নির্যাতিতরা ন্যায়বিচার পান। জোরপূর্বক গুমকে যেন অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, বিশ্বাসযোগ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ থাকলেও সরকার তা অস্বীকার করে। এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত আইন প্রয়োগকারীরা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং জেএস২০ জোরালোভাবে তুলে ধরেছে যে, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এতে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে যেসব ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের সবাইকে মুক্তি দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। জেএস১৮ জেলখানার করুণ পরিণতির কথা তুলে ধরেছে। বলা হয়েছে, জেলখানা বন্দিতে উপচে পড়ছে। সেখানে চিকিৎসা সুবিধা অপর্যাপ্ত। আছে চিকিৎসকের সংকট। কন্ডেম সেলে নিঃসঙ্গ বন্দির বিষয়ে রিপোর্ট করেছে জেএস১৩। বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে লঙ্ঘন করা হচ্ছে ইউনাইটেড নেশন্স স্ট্যান্ডার্ড মিনিমাম রুলস ফর দ্য ট্রিটমেন্ট অব প্রিজনার্স।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category
©ziacyberforce.com
themesba-lates1749691102