প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। বৃহস্পতিবার সকালে তেজগাঁওস্থ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ওই বৈঠক হয়। দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে বৈঠকে সুনির্দিষ্টভাবে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তাৎক্ষণিক তা জানা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্মকর্তার সঙ্গে মার্কিন দূতের বৈঠককে সঙ্গত কারণেই তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছে ওয়াকিবহাল সূত্র।
বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সেখানে নিজের চলাচলের নিরাপত্তা এসকর্ট কেন আচমকা প্রত্যাহার হলো- সে বিষয়ে জানতে চান। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত স্বতন্ত্র ভিসা নীতি নিয়ে আলোচনা করেন। মার্কিন দূতের বিদায়ের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে ব্রিফ করেন। সরকারও একটি স্বচ্ছ ও সুন্দর নির্বাচন চায় জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে বলেন, স্বতন্ত্র ভিসা নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে এমন নির্বাচন নিশ্চিতে সমর্থন দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। গত ২৪শে মে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন বাংলাদেশের জন্য আলাদা ভিসা নীতি ঘোষণা করেন। নীতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসা প্রদানে যখন তখন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে।
বৈঠকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নতুন যে ভিসা নীতি করেছে, তা নিয়ে রাষ্ট্রদূত আমাদের প্রতিক্রিয়া জানতে এসেছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমি বলেছি একটি সুন্দর নির্বাচন হবে। কোনো ষড়যন্ত্র না, কোনো রকমের মাসলম্যানের অভ্যুত্থান না, কিংবা বন্দুকের নল না, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই একটি নির্বাচন হোক, আমরাও সেটি চাই।
আলোচনায় রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তার বিষয়টি এসেছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, হঠাৎ করে কেন তার সড়ক নিরাপত্তা তুলে নেয়া হলো? সেই প্রশ্ন রেখেছেন তিনি। আমরা বলেছি, সিস্টেমে পরিবর্তনের কারণে এটা হয়েছে, তবে কূটনৈতিক পাড়ায় কোনো ধরনের নিরাপত্তা ত্রুটি হবে না। স্মরণ করা যায়, দারিদ্র্য বিমোচনে অসাধারণ কর্মের জন্য নোবেল জয়ী গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলাসহ সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নয়ন অংশীদারদের গভীর উদ্বেগ রয়েছে। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বন্ধু-উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর দূতরা বিষয়টি ব্যক্ত করে চলেছেন।